বন আইন

বন আইন হলো বনজ সম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য যে আইন বা বিধি পাস করা হয়, তাকে বন আইন বলে। 

বনজ সম্পদ হলো পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, মাটির ক্ষয়রোধ, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, পরিবেশের দূষণ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বন আইনের মাধ্যমে বনজ সম্পদকে টেকসইভাবে ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা হয়।

বাংলাদেশে বন আইন ১৯২৭ সালের ১৯ জুলাই জারি করা হয়। এই আইনের মাধ্যমে দেশের সমস্ত বনকে সরকারের মালিকানাধীন ঘোষণা করা হয়। আইনের ২(২) ধারায় বলা হয়েছে, “এই আইনের অধীনে, “বন” বলতে বনভূমি, বনজ গাছ, বনজ পণ্য, বন্যপ্রাণী এবং বনজ সম্পদের সাথে সম্পর্কিত যেকোনো কিছু বোঝায়।”

বন আইনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বনজ সম্পদকে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করা। এই আইনের মাধ্যমে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়:

  • বনভূমির সীমানা নির্ধারণ
  • বনভূমির ব্যবহার
  • বনজ গাছ কাটা
  • বনজ পণ্য সংগ্রহ
  • বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ

বন আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো:

ধারা ২: বন আইনের সংজ্ঞা

এই ধারায় বন আইনের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই আইনের অধীনে, “বন” বলতে বনভূমি, বনজ গাছ, বনজ পণ্য, বন্যপ্রাণী এবং বনজ সম্পদের সাথে সম্পর্কিত যেকোনো কিছু বোঝায়।

ধারা ৩: বন বিভাগের দায়িত্ব

এই ধারায় বন বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের দায়িত্ব হলো:

বনজ সম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করা

বনজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা

বনদূষণ রোধ করা

ধারা ৪: বনভূমির সীমানা নির্ধারণ

এই ধারায় বনভূমির সীমানা নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে দেওয়া হয়েছে। সরকার বনভূমির সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে।

ধারা ৫: বনভূমির ব্যবহার

এই ধারায় বনভূমির ব্যবহারের নিয়মকানুন দেওয়া হয়েছে। বনভূমিকে নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে:

  • বনজ সম্পদ উৎপাদন
  • বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ
  • পর্যটন
  • জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষা

ধারা ৬: বনজ গাছ কাটা

এই ধারায় বনজ গাছ কাটার নিয়মকানুন দেওয়া হয়েছে। বনজ গাছ কাটার জন্য বন বিভাগের অনুমতি প্রয়োজন।

ধারা ৭: বনজ পণ্য সংগ্রহ

এই ধারায় বনজ পণ্য সংগ্রহের নিয়মকানুন দেওয়া হয়েছে। বনজ পণ্য সংগ্রহের জন্য বন বিভাগের অনুমতি প্রয়োজন।

ধারা ৮: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ

এই ধারায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের নিয়মকানুন দেওয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণী হত্যা, আহত করা, ধরে রাখা, বিক্রি করা ইত্যাদি অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে।

বন আইনের অধীনে বন দূষণ, বনজ সম্পদের অবৈধ ব্যবহার, বন্যপ্রাণী হত্যা ইত্যাদি অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে।

বাংলাদেশের বন আইন ও বিধি

বন আইন

  1. আসাম ফরেস্ট রেগুলেশন, ১৮৯১
  2. ব্যক্তি মালিকানাধীন বন অইন, ১৯৫৯
  3. ৩বন আইন ১৯২৭
  4. আটিয়া ফরেস্ট (প্রটেকশন) অর্ডিনেন্স
  5. বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২
  6. ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩
  7. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন , ২০১৮

বিধি

  1. পার্বত্য চট্টগ্রাম বনজদ্রব্য পরিবহন বিধিমালা ১৯৭৩
  2. পোষা পাখি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২০
  3. কুমির লালন-পালন বিধিমালা, ২০১৯
  4. সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ এর সংশোধন (মে ৫,২০১১)
  5. সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ এর সংশোধন (জানুয়ারি ১৩,২০১০)
  6. সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪
  7. বনজদ্রব্য পরিবহন (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০১১
  8. করাত-কল (লাইসেন্স) বিধিমালা ২০১২
  9. রক্ষিত এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৭
  10. “রক্ষিত এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৭” এর সংশোধন  
  11. হরিণ ও হাতি লালন-পালন বিধিমালা ২০১৭
  12. অপরাধ উদঘাটনে (তথ্য প্রদানকারী) পুরস্কার প্রদান বিধিমালা, ২০২০
  13. বন অধিদপ্তরের কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯
  14. বন্যপ্রাণী দ্বারা আক্রান্ত জানমালের ক্ষতিপূরণ বিধিমালা, ২০২১
  15. সরকারি কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালা ,২০১৯
  16. সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮

লিখেছেনঃ মো. ইফতিকার রাহমান, প্রতিষ্ঠাতাঃ WEBKAKU GROUP

৬ষ্ঠ সেমিস্টার

কৃষি প্রশিক্ষণ ইনিস্টিউট, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *