No products in the cart.

জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষির অবদান
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি মহান বিজয় দিবস ২০২২ উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে। সম্মানিত আলোচকবৃন্দ বিজয় দিবসের এই আলোচনায় জাতির পিতার পাকিস্তানে অবস্থিতির স্মৃতিচারণ ও পরবর্তীতে ‘মুক্তিযুদ্ধ, শুরু হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে ভারত হয়ে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে আগমনসহ সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ইত্যাদির এক প্রায়গিক ভিত্তিক বর্ণনা দেন, যা ছিল নতুন প্রজন্মের কাছে এক বিরল অজানাকে জানার কাহিনী।
আলোচনায় বিশেষভাবে স্থান পেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের কারা জীবন নিয়ে অনেক অজানা ঘটনা, সরকারের সঙ্গে তার কথোপকথন ও পরবর্তীতে কারাবাস থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশের মাটিতে আগমন ইত্যাদি। তখন পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে যতই প্রস্তাব আসছিল না কেন বঙ্গবন্ধু তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন বিধায় আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ।
১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃতে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ত্রিশ লাখ শহীদের জীবন আত্মদানের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তানের কর্মী সম্মেলনে গণতান্ত্রিক যুবলীগ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে বাংলা ভাষার দাবির সপক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশ্রহণ করেন।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এই সংগঠনটির ভূমিকা খুবই স্মরণীয়। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ছাত্রলীগের ১০ দফা দাবির মধ্যে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলা এবং সামরিক বাহিনীতে বাঙালীদের নিয়োগ এবং বাধ্যতামূলক সামরিক শিক্ষার দাবি ছিল অন্যতম। ১১ মার্চের ১৯৪৮ সালে গ্রেপ্তার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের এক টার্নিং পয়েন্ট।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ঐতিহাসিক ১১ মার্চের গুরুত্ব এবং গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নয়, মূলত শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা পরিষদ গঠনের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগ সংগঠনটির জন্ম হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ঢাকার ‘রোজ গার্ডেন’, গোলাপবাগে। তখন শেখ মুজিব ছিলেন কারা অন্তরালে বন্দি।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পর্যন্ত যত ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিটির মুখ্য চরিত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যেমন- সর্বশেষ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ইত্যাদি। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের অফিস-আদালত কোর্ট-কাচারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিভাবে পরিচালিত হবে সে সম্পর্কে ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দেবার চাই যে, আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্ট-কাচারি, আদালত-ফৌজদারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
গরিবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে সেজন্য সমস্ত অন্যান্য যে জিনিসগুলো আছে, সেগুলোর হরতাল কাল থেকে চলবে না। রিকশা, গরুর গাড়ি, রেল চলবে, লঞ্চ চলবে; শুধু সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রিমকোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সেমি-গভর্নমেন্ট দপ্তর, ওয়াপদা কোনো কিছু চলবে না। ২৮ তারিখে কর্মচারীরা গিয়ে বেতন নিয়ে আসবেন।
এরপর যদি বেতন দেওয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে, সবকিছুুর আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।’ তার এই ঘোষণা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
শুরু হয় দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ।
২৫ মার্চ, ১৯৭১ কালরাতে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র, নিরপরাধ বাঙালিদের ওপর নৃশংস আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে নীলনক্সা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ অনুযায়ী। অপারেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পাকিস্তানি বাহিনী পরিকল্পনা অনুযায়ী ধানম-ি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পুরান ঢাকা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, তৎকালীন ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানাসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলা চালায়। অপারেশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী শুধু ঢাকা শহর নয়, আক্রমণ পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, দিনাজপুর, রংপুর, কুমিল্লা, সিলেট, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন বড় শহরে এবং একি দিনে সারাদেশে তেত্রিশ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়।
তাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতার নয় মাসের সংগ্রামের মধ্যে এ মাসেই বিধায় ডিসেম্বর মাসটি একদিকে বিজয়ের, অপরদিকে বেদনার, বিশেষ করে যারা মুক্তিযুদ্ধে তাদের স্বজনদের হারিয়েছেন, সেই শহীদ পরিবারগুলোর।
বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি, ১৯৭২-এ স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়। ১২ জানুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। বঙ্গবন্ধুর একক প্রচেষ্টায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ৭২-এর ১২ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করে। ৭-৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু আবার সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর মাত্র ১০ মাসের মধ্যে ৪ নভেম্বর বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান প্রণয়ন করেন।
’৭৩-এর ৭ মার্চ জাতীয় সংসদের সফল নির্বাচন সম্পন্ন করে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেন। বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৬টি দেশের স্বীকৃতি এবং ‘কমনওয়েলথ অব নেশনস্’, ‘জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন’, ‘ইসলামিক সম্মেলন সংস্থা’ ও ‘জাতিসংঘ’সহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছেন। যে মুহূর্তে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে স্বাভাবিক করেন, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দেন, ঠিক তখনই ঘাতকের নির্মম বুলেটে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ১৯৭৫-এর ১৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।
তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান এবং ছয় বছর পর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন, যিনি আজ দেশের সফল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশে- বিদেশে সন্মানিত। আজ বিজয়ের মাসে পেছন ফিরে তাকালে আমাদের স্বস্তির অনেক কারণ পাওয়া যায়। ৫১-এর বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে সম্মানজনক রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে।
আরও উল্লেখ্য, এই নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে বিশ্বের যে সকল রাষ্ট্রের সরকার প্রধান, সাংবাদিক, ভারতীয় সৈন্য যারা শহিদ হয়েছিলেন, তাদের পরিবারবর্গ যারা বিজয়ের পথে প্রত্যক্ষ সহায়তা করেছিলেন, তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা হয়েছে। দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, তাদের সন্তানদের জন্য চাকরিতে কোটা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ভাতা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন প্রভৃতি ছিল মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের অন্যতম ঘটনা।
২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩.৪৭ শতাংশ। ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তির ৪০.৬২ শতাংশ এখনো কৃষিতে নিয়োজিত। মানে কৃষি এখনো নিয়োগের বড় ক্ষেত্র। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী ৫১ বছরে দেশের প্রধান প্রধান শস্য উৎপাদন তিন থেকে পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের এ ভিত্তি স্থাপন করে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কৃষিনীতির পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ খাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান বছরের বাজেটে ১৬ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি ছাড়াও আরও ১৫ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে কৃষি খাতের উন্নয়ন ও কৃষকদের কল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে রূপকল্প ২০৪১, চলমান অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, জাতীয় কৃষিনীতি ২০১৮, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এবং অন্যান্য পরিকল্পনা দলিলের আলোকে সরকার কৃষির উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি খাতের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে আধুনিক ও বিরূপতা সহনশীল জাতের উদ্ভাবন, ফসলের নতুন ধরনের উদ্ভাবন, পানি সাশ্রয়ী সেচ প্রযুক্তি আবিষ্কার, ভূ-উপরস্থ পানি ব্যবহারের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ, ন্যায্যমূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করা, কৃষি উপকরণের ভর্তুকি বৃদ্ধি, কৃষিপণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত সংরক্ষণ সুবিধাদি নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি।
এর ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ, পাট রপ্তানিতে প্রথম ও উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, চা উৎপাদনে তৃতীয়, কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, আলু উৎপাদনে ষষ্ঠ দেশ, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে তৃতীয় এবং মাছচাষে পঞ্চম, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ইলিশ উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ও তেলাপিয়া উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ এবং এশিয়ায় তৃতীয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ প্রক্রিয়াজাত শিল্পে উৎপাদিত শস্যজাতীয় খাদ্য, হিমায়িত সবজি, ফল, আলুজাতীয় খাদ্য, ভেষজ খাদ্য, চিনিজাতীয় খাদ্য, মধু, মাছ ও অপ্রচলিত মাছজাতীয় খাদ্য, পোলট্রি ও দুধজাতীয় খাদ্য রপ্তানি করে থাকে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শস্য খাতের উন্নয়ন লক্ষ্য হলো উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ফলন ব্যবধান সর্বনিম্ন করা, কৃষিপণ্যের দাম স্থিতিশীল করা, কৃষকদের মুনাফা ও নিরাপত্তার উন্নতি বিধান, জলবায়ুসহিষ্ণু উৎপাদনে শস্যপণ্য বহুমুখীকরণ, কৃষির সরবরাহ শৃঙ্খল শক্তিশালী করা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ বৃদ্ধি করা, ক্ষুদ্র কৃষকদের ঋণ সুবিধাদি সহজীকরণ, উচ্চমানের গবেষণা ও বিতরণ সেবার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ, প্রাকৃতিক সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা।
এখন আমাদের লক্ষ্য হবে খাদ্য স্বয়ম্ভরতা অর্জন ও বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের মাধ্যমে পুরো কৃষি খাতকে বৃহৎ খামারভিত্তিক প্রাণবন্ত বাণিজ্যিক খাতে পরিণত করা। ক্ষুদ্রায়তন কৃষি থেকে আমাদের ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি জমি রক্ষায় কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো কৃষি জমি সংরক্ষণ ও তার যথাযথ ব্যবস্থাপনা, পতিত জমি চাষ করে উৎপাদন বৃদ্ধি, মাটি দূষণ-পরিবেশ দূষণ রোধ ইত্যাদি। করোনা মহামারির সময়ও কৃষি খাত দেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, টেকসই কৃষি উৎপাদনের মাধ্যমে এ দেশের অতীত সোনালি গৌরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তিনি বলেছেন, ‘সোনার বাংলার জন্য সোনার লোকের দরকার। বাংলাদেশ নির্যাতন, নিপীড়ন ও লুটপাটে জর্জরিত। এ সমস্যার সমাধান এবং সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে জণগণকে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
কৃষি অর্থনীতি সমিতি একটি পেশাজীবী সংগঠন, যার মূল কাজ কৃষি তথা কৃষকের উন্নয়নে নীতিসহায়তা প্রদান বিশেষত গবেষণার উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে। বর্তমান এই বৈশ্বিক পরিম-লে আসুন, আমরা সকলে মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন এক বাংলাদেশ বির্নিমাণে এগিয়ে যাই, সরকারের হাতকে শক্তিশালী করি শোষণমুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ায়।